ব্লু সিফন ডাবল পেটাল হিবিসকাস

Arindam Hait A

সৌন্দর্য্যের বিচারে জবা’র যে কোন জবাব নেই সে কথা আশা করি সব বন্ধুরাই স্বীকার করবেI আর সেই জবা যদি হয় ব্লু সিফন ডাবল পেটাল হিবিসকাস তার তো একটু অতিরিক্ত আকর্ষণ থাকবেই। এই ফুলটার একটা অন্যরকম আকর্ষণ আছে, কারণ এর রঙটাই অন্য জবার থেকে একে একটু আলাদা আদরের দাবিদার করে তুলেছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে নার্সারি থেকে কিনে আনার সময় ডাবল পেটাল বলে দিলেও বাড়ি এসে যখন ফুল হয় তখন দেখা যায় সেটা ডাবল পেটাল না হয়ে সিঙ্গেল পেটাল হয়ে গিয়েছেI এটা হয়তো ওই নার্সারির ইচ্ছাকৃত ভুল নয় কারণ এই ডাবল পেটাল জবা খুব কমই পাওয়া যায়I তাই তোমরা যারা আমার থেকে এই জবা নিয়েছো তারা অনেকেই এর যত্ন বা প্রতিস্থাপণ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলে I তাই তাদের আর আমার সব প্রিয় মালী বন্ধুদের উদ্দশ্যে আমি এর সঠিক পরিচর্যা বিষয়ে পাঁচটি টিপস বা পরামর্শ দেবো I

মাটি :- মাটি যেহেতু যে কোন গাছের বেঁচে থাকার প্রথম উপাদান তাই প্রথমেই বলবো মাটি কেমন হলে ভালো হয় I এই গাছের জন্য বালি মাটি বাদ দিয়ে যে কোন ভারীমাটি অর্থাৎ দোয়াসমাটি বা যে মাটিতে কাদার ভাগ বেশি তেমন মাটি নিতে হবে। কারণ বালি মাটিতে জবার কুড়ি ঝরার প্রবনতা অনেক বেশি হয়। সাধারণত আমাদের সবার হাতের কাছেই যে মাটি থাকে, সেই মাটি এঁটেল মাটি বা ভারী দোঁয়াশ মাটি যদি হয়,তার সাথে একবছরের বা তারও বেশি পুরনো পচানো গোরব সার , অথবা ভার্মিকম্পোস্ট, বা পাতাপচা সার সমপরিমানে মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে I তবে এক্ষেত্রে ছ’মাসের মধ্যে গাছটিকে আবার রিপট করার প্রোয়জন হয় । রিপট :-এবার রিপট করার সময় নিতে হবে দু’ভাগ গার্ডেন সয়েল,দুভাগ সাদা বালি/ নদীর বালি মাটি আর তার সঙ্গে দুভাগ কোকোপিট; জবা ফুলের মাটি তৈরির ক্ষেত্রে কোকোপিট খুব ভালো ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে I জবা ভেজা মাটি পছন্দ করে আর কোকোপিট সবথেকে ভালো, মাটির আর্দতা ধরে রাখতে সাহায্য করে I তবে বৃষ্টি না হলে সময় মত জল অবশ্যই দিতে হবে। এবার ভালো করে সব উপদার গুলো মিশিয়ে দু মিলিমিটার চালুনি দিয়ে চেলে মাটি তৈরি করে নিতে হবে।

টব :- আট/ দশ / বারো যেকোনটা নির্বাচন করা যেতে পারে। তবে প্রথমেই ছোট টব ব্যবহার করার পরামর্শ দেব I সূর্যের আলো :- মাটি তৈরি হয়ে যাওয়ার পর গাছ প্রতিস্থাপন করে কোন যায়গায় রাখবো এটা নিয়ে অনেকের অনেক প্রশ্ন থাকে তবে এই জবা মোটামুটি অল্প রোদ বা পর্যাপ্ত পরিমানে রোদ সব ক্ষেত্রেই এ বেশ ভালো ভাবে বেঁচে থাকতে পারে এবং প্রচুর ফুল দেবে । তবে একদম ছায়াতে নয় I তাহলে কুঁড়ি ঝরে যাবে । যেখানে পৃথিবীর সব ধরণের জবা ফুলেরই কুঁড়ি ঝরার প্রবল প্রবনতা আছে সে ক্ষেত্রে এর কিন্তু কুঁড়ি ঝরার প্রবনতা প্রায় নেই বললেই চলে I

জল :- জল দিতে হবে নিজের আন্দাজে অর্থাৎ অল্প রোদে বা ব্যালকনিতে হলে মাটির উপরে হাত দিয়ে ভেজা কম অণুভব বা শুকনো শুকনো মনে হলেই জল দিতে হবে। আর কড়া রোদ হলে নিয়ম করে দরকার হলে দুবার জল দিতে হবে।

খাবার :- আমার নিজের তৈরি “হিবিসকাস ফুড” আছে যদি কেউ নিতে চাও নিতে পারো I আমি এটা শুধুই জবা গাছের জন্য তৈরি করেছি I যেটা কিনা একদম ঝামেলাবিহীন I অর্থাৎ খাবারটা দাও, আর জল ঢেলে দাও, আর প্রচুর প্রচুর সুন্দর সুন্দর ফুল পাও । এছাড়াও যেটা করলে আরও ভালো ফুল পেতে পারো সেটা হলো(প্রথম ছ’মাসের জন্য)হাফ চামাচ ইউরিরা, এক চামচ পটাশ, এক চামচ ফসফেট.. এসব ভালো করে মিশিয়ে গাছের চারিপাশে দিয়ে জল ঢেলে দিতে হবে । এটা প্রতি কুড়ি দিন অন্তর অন্তর করতে হবে। গাছ প্রতিস্থাপণ করার দশদিন পর থেকে । ছ’মাসের খাবার কোর্স সম্পুর্ন হলে ইউরিয়া বাদ দিতে হবে; হাফ চামচ ফসফেট আর একচামচ পটাশ মিশিয়ে আগের পদ্ধতিতে দিয়ে যেতে হবে I মানে কুড়ি দিন অন্তর অন্তর ওই একই পদ্ধতিতে। আর অবশ্যই সার দেওয়ার আগে গাছের গোড়ার মাটি যেন ভেজা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে । এরপরে ক্রমশ গাছের গ্রোথ বাড়ার/ কমার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের কিছু পরিবর্তন হয় সেটা আমি পরে বলে দেবো।

রোগ-পোকার প্রতিকার:- এই পর্যায়টি জানার জন্য আমি অবশ্যই করে তোমাদেরকে আমার ভিডিওটি দেখার অনুরোধ করবো
এসব সামান্য কিছু নিয়ম সম্পুর্নরূপে মেনে চললে তোমাদের প্রিয় বাগানে ব্লু সিফন ডাবল পেটাল হিবিসকাস ফুলে ভরে উঠবে আর জাস্ট হেভেন এর রূপ নিয়ে ফুলে ফুলে সেজে উঠবে I


Response (5)
  1. N
    Niladri Sikhar Ghosh Nov 12

    Very Nice looking flower!!!

  2. M
    Monajit Roy Nov 16

    Good morning… good information dada

  3. S
    Swarnendu Nov 18

    Chara paoa jabe?

  4. S
    Sanjib pore Nov 20

    দাদা আমি একটা গাছ নিতে চাই..
    দাম jante পারি?? আর ki ভাবে পাবো?

Leave a comment
Your email address will not be published. Required fields are marked *