জবা গাছের শাখার ডগার দিকে সাদা পাউডার ঢাকা অংশ দেখে বুঝতে পারা যায় যে জবার চরম শত্রু ইতিমধ্যেই জবা গাছে এসে উপস্থিত। জবা গাছে পিঁপড়ের আনাগোনা শুরু হয়েছে। তুমি যখন জবা গাছে হঠাৎ করে পিঁপড়ের আনাগোনা দেখতে পাবে তখন বুঝতে পারবে যে হ্যাঁ আমার জবা গাছ এখন সংকটে, তাড়াতাড়ি এর কোন একটা ব্যবস্থা না নিলে চোখের সামনে গাছটা শেষ হয়ে যাবে। আমি জবা গাছের যে সংকটের কথা বলছি সেটা সম্পর্কে যারা জবা গাছ করছো তারা অবশ্যই করে অবগত আছ। কিন্তু যারা নতুন নতুন বাগান করছো সাথে জবা গাছ করছো তারা অত্যন্ত বিরক্তিকর অবস্থায় পড়েছে এই পোকা নিয়ে। সেটা আসলে জবা গাছে দয়ে পোকার আক্রমণ হয়েছে। ইংরেজিতে যাকে বলে মিলিবাগ। তবে বিভিন্ন গাছের বিভিন্ন প্রজাতির দয়ে পোকার আক্রমণ দেখা যায়। জবা গাছে যে প্রজাতির পোকার আক্রমণ দেখা যায় সেটি হল Centrococcus insolitus(সেন্ট্রোকোকাস ইনসোলিটাস)।
শাখার ডগার দিকে যে সাদা পাউডার ঢাকা অংশ দেখতে পাওয়া যায় ওই পাউডারের তলায় গোলাপি বর্ণের নরম দয়ে পোকা কচি পাতা নরম ডাটা, কুড়ি ও ফুলের নরম বোঁটা থেকে রস চুষে খায়। ডগা ও পাতা কুঁকড়ে যায়, বেঁকে যায় অর্থাৎ সর্বোপরি একটা বিকৃতি লক্ষ্য করা যায়। যে গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল ফুটে ছিল সেই গাছে ফুল ফোটা কমে যায়, ফুলের সাইজ ছোট হয়ে যায়, আবার কখনও কখনও ফুল ফোটা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এই পোকাটি মূলত শীতকালের শুরু থেকে গ্রীষ্মকালের শেষ পর্যন্ত আক্রমণ চালাতে থাকে। তাই বছরের এই সময়ে দিয়ে পোকার আক্রমণ যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রতিকার:-
তো এবার আসি যদি আমাদের জবা গাছ গুলোতে দয়ে পোকার আক্রমণ হয় সেই আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য আমাদের কি ধরনের ব্যবস্থাপনা নেওয়া উচিত ! এখানে দুটো কীটনাশকের কথা আমি বলব। যেটাতে আমি উপকার পেয়েছি এবং বাজারে অনেক ধরনের কীটনাশক পাওয়া যায় যেটা আমি ব্যবহার করিনি সেটার কথা বলতে পারবোনা। এখানে অনেকের মনে একটা কথা আছে অরিন্দম যদি ঘরোয়া উপায়ের কথা বলে তাহলে খুব ভালো হয়। হ্যাঁ আমি ঘরোয়া উপায়ে কথা বলতে পারি, তবে তার আগে একটা কথা বলে দিই যদি সত্যিই জবা গাছ থেকে বাঁচাতে চাও তাহলে প্রথমে রাসায়নিক কীটনাশক দিয়ে গাছটাকে সুস্থ করে তোলো। তারপর তুমি ঘরোয়া উপায়ে যে ধরনের জৈব কীটনাশক আমরা তৈরি করতে পারি সেগুলো ব্যবহার করবে…
১) ১ লিটার জলে পাঁচ ফোঁটা ইমিডাক্লোরোপিড নামক মূল উপাদানে তৈরি বাজারে পাওয়া যায় এমন যে কোন কীটনাশক মিলিবাগ হলে ৫ দিন অন্তর অন্তর মোট ৭ বার স্প্রে করতে হবে। এটি বাজারে কনসফিডার, মিডিয়া নামে পাওয়া যায়। কনফিডার বাংলাদেশেও পাওয়া যায়।
২) কার্বোসালফান নামক মূল উপাদানে তৈরি এমন যে কোন কীটনাশক বাজারে যেটা মার্শাল নামে পাওয়া যায়। তবে এটি বাংলাদেশে পাওয়া যায় কিনা জানিনা। আমার বিশ্বাস পাওয়া যায়। এই কীটনাশক প্রতি লিটার জলে ২ml দিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে ৫ দিন অন্তর ৩ বার করতে হবে।
৩) এবার যারা ঘরোয়া উপায়ে কীটনাশক তৈরি করে গাছে স্প্রে করতে চাইছো। তাদের জন্য নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে বিভিন্ন ধরনের জৈব কীটনাশক এবং জবা গাছের মিলিবাগ তাড়াতে যে ঘরোয়া উপায়ের কথা বলা হয়েছে, সেটা দেখে বুঝে নিজের ঘরে তৈরি করে প্রয়োগ করতে পারো। তবে আবারো বলবো আগে উপরিউক্ত রাসায়নিক কীটনাশক গুলো ব্যবহার করে, গাছটাকে আগে মিলিবাগ এর হাত থেকে রক্ষা করো তারপরে তুমি এই ঘরোয়া কীটনাশক প্রয়োগ করো।
ঘরোয়া উপায়ে তৈরি জৈব কীটনাশক
ভিডিওগুলো যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই করে লাইক এবং শেয়ার করার অনুরোধ রইল। আর তুমি যদি নতুন হয়ে থাকো প্লিজ আমার এই ইউটিউব চ্যানেলকে সাবস্ক্রাইব করার অনুরোধ রইলো।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:~
যে কোন কীটনাশক বা জলে দ্রবণীয় কোন পুষ্টি মৌল যখন গাছের পাতায় স্প্রে করবে তখন সেই পাতাটা যেন পরিষ্কার থাকে অর্থাৎ কোন কিছু স্প্রে করার আগে গাছগুলোকে স্নান করিয়ে নিয়ে পাতা গুলো পরিষ্কার করা অবশ্য কর্তব্য।
আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে তোমরা জবা গাছের চরম শত্রু মিলিবাগ সম্পর্কে জেনেছো এবং কিভাবে তাকে প্রতিহত করতে হয় সেটা সম্পর্কে জানলে। যদি এই সম্বন্ধীয় কোন প্রশ্ন এখনো মনে থাকে তাহলে অবশ্যই করে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাকে জানাতে পারো। সেগুলোর সমাধান করার আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, সবাই খুব ভালো থেকো নমস্কার।🙏
lovely ❤️❤️❤️❤️
Khub sundar vabe bujhiyecho.. ebar amar gach gulo theke mili bug tarabo..dhonyobad
অনেক ধন্যবাদ। আমার জবা গাছগুলি ও স্থলপদ্ম গাছগুলি মিলিবাগে আক্রান্ত। তোমার এই পোস্ট টা খুবই প্রয়োজনীয়।
এটাই dorkar child…thank you…
Ai kitnasok guli apnar kache payoya jai, tale khub upokar hobe….