গন্ধরাজ সু-গন্ধে সেরা তাই তার নাম গন্ধরাজ। গন্ধরাজ আমাদের কাছে খুব পরিচিত একটা ফুল যদিও এর আদি নিবাস হল চীন ও জাপান। গন্ধরাজ রুবিয়েসি পরিবারের গার্ডেনিয়া গণের অন্তর্ভূক্ত একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Gardenia jasminoides.আমেরিকান প্রকৃতিবিদ ড: আলেকজেন্ডার গার্ডেন এর নাম অনুসারে এই ফুলের ইংরেজি নামকরণ করা হয়েছে।
এই গাছের বংশবৃদ্ধির কৌশল ও অত্যন্ত সহজ। ডাল কেটে পুঁতে দিলেই বেঁচে যায়। মাত্র দু একবছর পরই দিব্যি ফুল ধরতে শুরু করে। এভাবেই গাছটির বিস্তার ঘটে সব জায়গায়। এ ফুলের গন্ধ একেবারেই স্বতন্ত্র। গ্রীষ্মের আলুথালু বাতাসে মাতাল করা সুগন্ধ ভেসে বেড়ায়। বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে গন্ধের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। সহজলভ্য,পুষ্পপ্রাচুর্য্য এবং অনেকদিন ধরে গন্ধ ছড়ানো কারণে গন্ধরাজ ফুল গ্রামে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। গাছটি গঠন বিন্যাস ও ফুলের সুগন্ধের জন্য সব জায়গাতেই সমাদৃত ।
বৈশিষ্ট্য :–
হলুদ গন্ধরাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য এর একটি ফুলের মধ্যে তিনটি রঙ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এই ফুল সন্ধ্যায় ফোটার সময় সাদা,সকালে হলুদ ও বিকালে গেরুয়া রঙ ধারণ করে। সাদা গন্ধরাজ ফুল শুকিয়ে যাওয়ার পর ও এর সুগন্ধ থেকে যায় অনেকদিন। হলুদ গন্ধরাজ ও সাদা গন্ধরাজের মতো অত্যন্ত সুগন্ধযুক্ত, প্রচুর পরিমানে ফোটে তবে সাদা গন্ধরাজের মতো এই গন্ধরাজের কুঁড়ি ঝরে যাওয়ার কোন সমস্যা দেখা যায় না।
বি:দ্র :- যদি এই হলুদ গন্ধরাজ গাছ ও এই গাছের জন্য উপযুক্ত special blend fertilizer পেতে চাও তবে আমার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে 8972774914 যোগাযোগ করার অনুরোধ রইল I
আজ এই পর্বে হলুদ গন্ধরাজের সম্পূর্ণ পরিচর্যা নিয়ে আলোচনা করব।
টব নির্বাচন :–
এই গাছের জন্য আট/ দশ/বারো ইঞ্চির টব নেওয়া প্রয়োজন।
মাটির ব্যবস্থাপনা :–
এই গাছের জন্য একটু ভারী ধরণের মাটির প্রয়োজন। তাই এঁটেল মাটি এই গাছের জন্য সবচেয়ে ভালো। এর জন্য দরকার দুভাগ এঁটেল মাটি বা গার্ডেন সয়েল(হাতের কাছে যে ধরনের মাটি আছে), একভাগ ভার্মিকম্পোস্ট বা এক বছরের পুরোনো পচানো গোবর সার বা পাতাপচা সার এবং একভাগ কোকোপিট বা কাঠের গুঁড়ো বা ধানের তুষ (মাটির ময়েশ্চার ধরে রাখার জন্য)। এর সাথে আট ইঞ্চি টবের জন্য হাফ চা চামচ ও দশ ও বারো ইঞ্চি টবের জন্য এক চা চামচ ফসফেট মেশাতে হবে। এছাড়া আমার তৈরী special blend fertilizer আট ইঞ্চি টবের জন্য হাফ মুঠো ও দশ/বারো ইঞ্চি টবের জন্য একমুঠো এই মাটির সাথে মিশিয়ে নিলে আর কিছু মেশানোর দরকার হবে না। ভার্মিকম্পোস্ট বা গোবর সার বা পাতাপচা সার না পাওয়া যায় তবে সাধারণ মাটিতে ও বসানো যেতে পারে।
আলোর ব্যবস্থাপনা :–
এই গাছ রোদ খুব ভালোবাসে। তাই প্রচুর পরিমানে ফুল পেতে চাইলে এই গাছটা সরাসরি রোদের মধ্যে রাখতে হবে।
জলের ব্যবস্থাপনা :–
এই গাছ ময়েশ্চার পছন্দ করে। তাই এমনভাবে জল দিতে হবে যাতে সবসময় মাটির ময়েশ্চার বজায় থাকে। মাটি যেন কখনই ভিজে চুপচুপে না হয়ে থাকে। নয়ত অতিরিক্ত জল বসে গাছ মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
খাবারের ব্যবস্থাপনা :–
প্রত্যেকমাসে বা কুড়িদিন অন্তর খোলপচা জল ও সাথে এক চামচ ফসফেট দিতে হবে প্রথম তিনমাস। এরপর থেকে খোলপচা জল অথবা একমুঠো সরিষার গুঁড়ো খোল,এক চা চামচ পটাশ ও এক চা চামচ ফসফেট একসাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
তবে তুমি যদি এই গাছের জন্য উপযুক্ত special blend fertilizer যেটা আমার বানানো, ব্যবহার করতে চাও, তবে দশ ও বারো ইঞ্চি টবের জন্য এই সার একমুঠো করে মাসে একবার দিলে আর কোনরকম খাবার দেওয়ার দরকার হবে না। সংগ্রহ করতে চাইলে আমার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে 8972774914 যোগাযোগ করার অনুরোধ রইল I
রোগ ও পোকা :-
এই গাছে সাধারণত কোন রকম রোগপোকার আক্রমণ দেখা যায় না। তবে গাছের গোড়ায় জল বসে গেলে গাছ মারা যেতে পারে। প্রতি 7 দিন অন্তর অন্তর বাগানের অন্যান্য সমস্ত গাছের জন্য যে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক আমরা ব্যবহার করে থাকি তা অন্য গাছগুলোকে স্প্রে করার সময় রুটিনমাফিক এই গাছে স্প্রে করলে কখনোই রোগ ও পোকার আক্রমণ হবে না I
এই হল হলুদ গন্ধরাজের সম্পূর্ণ পরিচর্যা।এর ভিডিওটি দেখতে হলে নিচের লিংকটি অনুসরণ করার অনুরোধ রইল।সকলকে ধন্যবাদ।🙏🙏🙏🙏