বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় বহুবর্ষজীবী লতাজাতীয় ফুলগাছ গুলির মধ্যে নীলমণিলতার জনপ্রিয়তা সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি I ছবিতে নীলমণিলতার রূপের ছটাতে আমরা মুগ্ধ I মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকায় এই গাছটির দেখা মেলে I এর বিজ্ঞানসম্মত নাম Petrea Volubilis, তবে মজার ব্যাপারটা হল Petrea Volubilis নামক এই গাছটির বাংলা নামকরণ “নীলমনিলতা” করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং। শোনা যায় এই নামকরণের সময় তিনি শান্তিনিকেতনে ছিলেন এবং শান্তিনিকেতনের থাকাকালীন তার নজরে আসে গাছটি ও সেই সময় গাছটি ফুলে ফুলে পরিপুর্ণ ছিল I গাছটির রূপে মুগ্ধ হয়ে তিনি নামকরণটি করেন এবং Petrea Volubilis নামক এই গাছটি বাংলা তথা সারা বিশ্বের কাছে নীলমণিলতা নামে পরিচিতি পায় I যার কারণে কেউ শুধুমাত্র সুন্দর ফুল হয় বলেই নয়, এই গাছের সঙ্গে কবিগুরুর একটা সম্পর্ক রয়েছে এবং এই গাছটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যন্ত প্রিয় গাছ হিসেবে পরিচিত বলেই সে তার নিজের বাগানে গাছটিকে অ্যাসেট হিসেবে সংগ্রহ করে থাকে I আর তুমি যদি এই গাছটি সংগ্রহ করতে চাও তবে আমার 8972774914 হোয়াটস্অ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করতে পারো।
তবে আজ আবারো এই নীলমণিলতার পরিচর্যা কেমনভাবে করতে হয় তা লিখিত আকারে দিলাম। অন্যান্য সমস্ত গাছের মতোই এই গাছটি যদি সরাসরি মাটিতে বসাতে চাও তাহলে তার জন্য নূন্যতম কোন পরিচর্যা দরকার হয় না I গাছটি নিজেই তার চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টিমৌল মাটি থেকে শোষণ করে বেড়ে উঠবে । তবে গাছটি যদি টবে প্রতিস্থাপন করতে চাও, তাহলে গাছটির চাহিদা অনুযায়ী মাটি,খাবার,আলো,জল,রোগপোকার থেকে রক্ষা পাওয়ার ব্যবস্হাপনা সঠিক মত করতে হবে I আর সেই সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা নিম্নে বর্ণিত হলো I
মাটি প্রস্তুতি :-
নীলমনিলতা একটু ভারী ধরণের মাটি পছন্দ করে।মানে কোন মাটিতে যদি বালির পরিমাণ বেশি থাকে তবে সেরকম মাটিতে এই গাছ সেভাবেবেড়ে উঠতে পারে না। যদিও বেড়ে ওঠে,তার বৃদ্ধি খুব কম হয় আর ফুল খুব কম আসে । তাই আমরা এই গাছের মাটি প্রস্তুত করতে গিয়ে ভারী ধরনের মাটি তৈরি করব I আর এই ভারি মাটির জন্য এটেঁল মাটির প্রয়োজন হয় । এই মাটির সাথে কোনরকম সাদা বালি বা লাল বালি মেশানোর দরকার নেই । তুমি যদি নার্সারি থেকে মাটি সংগ্রহ করো তবে সেই মাটি শুকিয়ে,ঝুরো করে নিয়ে,মাটির মধ্যে থাকা ঘাসের দানা বা মূল আলাদা করে নিতে হবে। এই মাটি নিতে হবে দু ভাগ। এর সাথে এক ভাগ ভার্মিকম্পোস্ট(কেঁচোসার), অথবা এক বছরের পুরোনো পচানো গোবর সার, অথবা এক বছরের পুরোনো পচানো পাতা পচা সার এবং ময়েশ্চার ধরে রাখার জন্য 12ইঞ্চি টবের জন্য এক আঁচলা কোকোপিট অথবা ধানের তুষ অথবা কাঠের গুঁড়ো মেশাতে হবে । এর সাথে 10/12 ইঞ্চি টবের জন্য এক চা চামচ ফসফেট ভালোকরে মিশিয়ে নিলেই তৈরী হয়ে গেল নীলমণি লতার মাটি।
প্রতিস্থাপন পদ্ধতি :-
টবে ঠিকমতো ড্রেনেজ সিস্টেম করে অল্প পরিমাণ মাটি দিয়ে গাছটি টবের ঠিক মাঝ বরাবর বসাতে হবে। এরপর প্রয়োজনানুযায়ী মাটি ভালোকরে ঠেসে ঠেসে দিতে হবে কারণ ঠেসে দিলে মাটির মধ্যে থাকা বাতাস বেরিয়ে যায় ফলে গাছের শিকড় পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। প্রতিস্থাপন হয়ে গেলে উক্ত গাছ জল ভালোবাসুক কি নাই বাসুক, নিয়ম অনুযায়ী একদম ভরপুর জল দিয়ে দিতে হবে।
বি:দ্র:—টবে মাটি দেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে টবের ওপর 2ইঞ্চি ফাঁকা জায়গা থাকে।
আলো :-
এই গাছ যেহেতু রোদ্দুর খুব ভালোবাসে তাই যেখানে সরাসরি সূর্যালোক আসে সেখানে রাখতে হবে। ব্যালকনিতে ও করা যায় তবে সেক্ষেত্রে গাছটির উপরি অংশ ব্যালকনির বাইরে বের করে রাখতে হবে। এতে যতটুকু রোদ পায় তাতেই গাছটি সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠতে পারবে।
জল :–
এই গাছে জলের চাহিদা সেভাবে নেই। তাই জল কম অথবা বেশি হলে এর কোন অসুবিধা হয় না।যখন মাটির ময়েশ্চার একটু কম থাকবে তখন জল দেওয়ার প্রয়োজন হবে । শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে গাছের গোড়ায় যেন কখনই জল না জমে।
প্রয়োজনীয় খাদ্য :-
তুমি যদি আমার তৈরি All Purpose Fertilizer অর্থাৎ গাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টিমৌল নিতে চাও তাহলে আমার 8972774914 নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারো l এইপুষ্টিমৌলটি প্রয়োগ করলে আর অন্য কোন সার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না lপুষ্টিমৌলটির প্রয়োগ পদ্ধতি হলো মাসে একবার, 10 ইঞ্চি টবের গাছের জন্য একমুঠো পরিমাণ 8 ইঞ্চি টবের গাছের জন্য একমুঠো পরিমাণের থেকে সামান্য কম পরিমাণ এবং 6 ইঞ্চি টবের গাছের জন্য অর্ধেক মুঠো পরিমাণ প্রয়োগ করতে হবে l এবং প্রয়োগ করার পরে জল ঢেলে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে l তাছাড়াও তুমি যদি অন্য ভাবে সার প্রয়োগ করতে চাও তাহলে বাজার চলতি যে NPK গুলি পাওয়া যায় সেগুলি ব্যবহার করতে পারো I বাজারে NPK 19.19.19 দু ভাবে পাওয়া যায় granules এবং water soluble হিসেবে I যদি water soluble হয় তবে এক লিটার জলে এক গ্রাম দিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে 15 দিনে একবার আর granules হলে এক চা চামচ করে প্রত্যেক মাসে ছড়িয়ে দিতে হবে। এবং প্রয়োগ করার পরে জল ঢেলে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে l
রোগ পোকা :- এই গাছে মূলত ডাইব্যাক ও মিলিবাগ হতে দেখা যায়।ডাইব্যাক এর জন্য ডাইব্যাক হওয়া অংশ কেটে দিয়ে ওই কাটা অংশে যেকোন ছত্রাকনাশক যেমন সাফ্/ব্যাভিস্টিন/ব্লাইটক্স/ম্যানসার লাগিয়ে দিতে হবে। মিলিবাগের জন্য কনফিডার ,যার কম্পোজিসান ইমিডাক্লোরোপিড সেটা এক লিটার জলে 5 ফোঁটা দিয়ে ভালোকরে ঝাঁকিয়ে 5 দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে যতদিন না মিলিবাগ সম্পূর্ণ নির্মূল হয়।
এভাবে তুমি একটা নীলমণিলতা গাছকে টবের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফুল ফোটাতে পারবে এবং পরবর্তীকালে আমাদের এই মালি পরিবারে তার ছবি শেয়ার করতে পারবে I সবাইকে অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা l 🙏
Dada mandivila gacher sampurno care jante chai…
What is the cost of nilmoni lota tree?