সেই ছোটবেলা থেকে প্রথম সারির বেশকিছু দেশীয় ফুলের সাথে আমাদের পরিচয় হয়েছে এবং পরিবেশগত কারণে সবার সেটা হতে থাকে l তাদের মধ্যে জবা, টগর, শিউলি, রজনীগন্ধা, গোলাপ প্রভৃতি l না, আজ এই সমস্ত ফুল গাছের পরিচর্যা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো না l তবে জবা প্রজাতির মধ্যে নতুন এক ধরনের প্রজাতি যার ফুলের গাঠনিক বৈশিষ্ট্যের কারণে কিছু প্রচলিত নামের প্রচলন ইতিমধ্যেই হয়েছে l হ্যাঁ, আজ আমি আলোচনা করব জবা ফুল গাছের একটি বিশেষ ধরনের প্রজাতি নিয়ে ,আর এই বিশেষ ধরনের প্রজাতিটি নাম হল লন্ঠন বা ঘন্টা জবা l অবশ্য এই দুটি নামই প্রচলিত নাম l এরবিজ্ঞানসম্মত নাম Abutilon hibiscus l তুমি যদি এই ফুলগাছটি পেতে চাও তাহলে আমার 8972774914হোয়াটস্যাপ নম্বরের মাধ্যমে যোগাযোগ করে গাছটি সংগ্রহ করতে পারো I এটি রেড টাইগার নামে ও পরিচিত। অবশ্য অনেক আগেই আমার ইউটিউব চ্যানেলে এই গাছটির প্রতিস্থাপন ও সম্পূর্ণ পরিচর্যা নিয়ে ভিডিও করেছি l যদি তোমরা কেউ দেখতে চাও তাহলে নিচে দেওয়া hoyeche.
তবে আরো একবার এই ঘণ্টা জবার পরিচর্যা কেমন ভাবে করতে হয় সেটা লিখিত আকারে প্রকাশ করা হলো l জবার এই প্রজাতি প্রায় সারাবছরই ফুল দেয়। শীত, বসন্ত ও গরমকালের শুরুর দিকে ফুল দেওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে এবং বর্ষাকালে এই প্রবণতা একটু কমে যায়।গাছটি সরাসরি মাটিতে প্রতিস্থাপন করলে এর জন্য মাটি তৈরী করার দরকার হয় না l তবে সারের ব্যবস্থাপনা অবশ্যই করে করতে হয়। কিন্তু টবে করতে চাইলে সমস্ত গাছের মত এই গাছেরও তার পছন্দ অনুযায়ী মাটি তৈরী করতে হবে।
মাটি প্রস্তুতি :-এই গাছের মাটি তৈরী করতে আমাদের লাগবে,একভাগ গার্ডেন সয়েল যেটা মূলত এঁটেল মাটি কেই বোঝানো হয়,যদি এঁটেল মাটি না থাকে,তবে তোমার হাতের কাছে যে ধরনের মাটি আছে সেই মাটি একভাগ, একভাগ নদীর সাদা বালি(Horticultural sand/River sand/silver sand),একভাগ লাল বালি (বিল্ডিং তৈরী করার লাল বালি), একভাগ ভার্মিকম্পোস্ট অথবা এক বছরের পুরোনো পচানো গোবর সার অথবা এক বছরের পুরোনো পচানো পাতাপচা সার। এগুলোর সাথে 6/8ইঞ্চি টবের জন্য চা চামচের হাফ চামচ ফসফেট,10/12 ইঞ্চি টবের জন্য চা চামচের এক চামচের এক চামচ ফসফেট খুব ভালো করে মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করতে হবে।
বি:দ্র:–লাল বালি মেশানোর আগে বালি ভালো করে ধুয়ে খেলিয়ে শুকিয়ে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
প্রতিস্থাপন পদ্ধতি :- টবের ড্রেনেজ সিস্টেম করার পর প্রথমে টবে অল্প করে মাটি দিয়ে গাছটা টবের ঠিক মাঝখানে বসিয়ে নিতে হবে।তারপর যতটা মাটি প্রয়োজন ততটা মাটি টবে চেপে চেপে দিতে হবে। মাটি দেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন টবের ওপর থেকে 2ইঞ্চি ফাঁকা থাকে। প্রতিস্থাপন শেষে উক্ত গাছ জল ভালোবাসুক অথবা নাই ভালোবাসুক ওই মাটিতে ভরপুর জল দিতেই হবে।
আলো :- প্রতিস্থাপনের পর এক সপ্তাহ একটু ছায়াতে রেখে দিতে হবে। এক সপ্তাহ পর যেহেতু এই প্রজাতির জবা রোদ্দুর খুব ভালোবাসে তাই সারাদিন রোদ্দুর পায় এমন একটা জায়গায় তাকে রাখতে হবে। তবে এই গাছ ব্যালকনিতে যেখানে উজ্জ্বল আলো আসে সেখানেও করা সম্ভব।তাই যারা ফ্ল্যাট এ থাকো তারাও এই জবা করতে পারবে।
জল :- এই গাছ মাটিতে জল জমা একেবারেই পছন্দ করে না। এমনভাবে মাটি তৈরী করতে হবে যে মাটিতে কখনই জল দাড়াবে না। তাই তার জন্য ড্রেনেজ সিস্টেম খুব ভালো হতে হবে।লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে জল দেওয়ার সাথে সাথে জল ড্রেন আউট হয়ে যায় এবং জল যেন জমে না থাকে। গোড়ায় যেন জল না বসে আর ভিজে চুপচুপে যেন না হয়ে থাকে। ময়েশ্চার থাকুক না থাকুক,মাটি শুকনো হয়ে যাক্ না যাক্ কোন অসুবিধা নেই।শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে গোড়ায় যাতে জল না জমে এবং বেশি জল যাতে না দেওয়া হয়। তবে এই গাছে অতিরিক্ত বৃষ্টির জল লাগলে মারা যাবার সম্ভাবনা থাকে l
প্রয়োজনীয় খাদ্য :- তুমি যদি আমার তৈরি হিবিস্কাস ফুড অর্থাৎ জবা গাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টিমৌল নিতে চাও তাহলে আমার 8972774914 নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারো l এইপুষ্টিমৌলটি প্রয়োগ করলে আর অন্য কোন সার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না lপুষ্টিমৌলটির প্রয়োগ পদ্ধতি হলো মাসে একবার, 10 ইঞ্চি টবের গাছের জন্য একমুঠো পরিমাণ 8 ইঞ্চি টবের গাছের জন্য একমুঠো পরিমাণের থেকে সামান্য কম পরিমাণ এবং 6 ইঞ্চি টবের গাছের জন্য অর্ধেক মুঠো পরিমাণ প্রয়োগ করতে হবে l এবং প্রয়োগ করার পরে জল ঢেলে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে l তাছাড়াও তুমি যদি অন্য ভাবে সার প্রয়োগ করতে চাও তাহলে গাছ বসানোর 3দিন পর থেকে 12:61:00, 1লিটার জলে 1গ্রাম দিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে তা থেকে 250 মিলি গাছের গোড়ায় 10দিন অন্তর অন্তর মোট চারবার দিতে হবে। গাছ বসানোর পর প্রথম একমাস এটা দিতে হবে। তারপর থেকে 13:00:45, 1লিটার জলে একগ্রাম দিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে তা থেকে 250মিলি গাছের গোড়ায় দিতে হবে।
রোগ পোকা ও তার প্রতিকার :- রোগ পোকার কথা জানতে হলে ভিডিওটি দেখতে অনুরোধ করবো।
এভাবে স্টেপ বাই স্টেপ ফলো করে করতে পারলে তুমি অবশ্যই খুব ভালো করে লন্ঠন জবা বা ঘন্টা জবা করতে পারবে এবং প্রচুর ফুল ফোটাতে পারবে।ধন্যবাদ।।
অনেক ভালো উদ্যোগ দাদা।তোমার জন্য শুভকামনা থাকবে সবসময়। ভালো থেকো সবসময়।